Palah Biswas On Unique Identity No1.mpg

Unique Identity No2

Please send the LINK to your Addresslist and send me every update, event, development,documents and FEEDBACK . just mail to palashbiswaskl@gmail.com

Website templates

Zia clarifies his timing of declaration of independence

what mujib said

Jyothi Basu Is Dead

Unflinching Left firm on nuke deal

Jyoti Basu's Address on the Lok Sabha Elections 2009

Basu expresses shock over poll debacle

Jyoti Basu: The Pragmatist

Dr.BR Ambedkar

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin Babu and basanti Devi were living

"The Day India Burned"--A Documentary On Partition Part-1/9

Partition

Partition of India - refugees displaced by the partition

Wednesday, March 4, 2015

হোলি হ্যায় ঃ কার বিজয় উত্সব ? শরদিন্দু উদ্দীপন

হোলি হ্যায় ঃ কার বিজয় উত্সব ? শরদিন্দু উদ্দীপন

মোড়ের মাথায় রং পিচকারীর দোকান। থরে থরে আবির। ডানপিটে ছেলেমেয়েরা আবার ওই আবির টাবিরে সন্তুষ্ট নয়। তাদের চাই কৌটার রং। হাতে গুলিয় মুখে লাগিয়ে দিলেই ১ সপ্তা ধরে  ঘষে ঘষে তোলা যাবেনা। মাথায় রঙের গুড়ো ঢেলে দিলেই স্নান করার সময় সমস্ত শরীরে রং লেগে যাবে।  কোন কোন রঙে আবার এমন সব ক্যামিকেল থাকবে যে চামড়া জ্বলে যাবে, মাথায় লাগলে চুল উঠে যাবে, চোখে লাগলে চোখ নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকবে। তাতে কী ?     

হোলি উৎসবের এটাই আসল মজা। এটাই মেজাজ। এই মজা এবং মেজাজ আরো জমিয়ে দেবে সিদ্ধির গোলা। আজকাল আবার সিদ্ধির বদলে অঢেল চুল্লু। বাবুদের ঘরে বিলিতির ফোয়ারা। নারীপুরুষ নির্বিশেষে এমন পার্থিব মজা উপভোগের সুযোগ কবার আসে মশাই? রং মাখুন, জোর করে মাখান, বুড়ির ঘর জ্বালিয়ে দিন। আকন্ঠ পান করে পার্থিব মজায় সিদ্ধি লাভ করুণ। হোলি হ্যায়...   

 

হোলি উৎসবের এটাই গতিমুখ এখন। প্রসাদ ও প্রমোদে মত্ত হয়ে ওঠার এই গতি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে আমাদের মহান সরকার। গোটা রাষ্ট্র যেন এই পার্থিব প্রমোদে মত্ত থাকতে পারে তার জন্য রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলা আবার একদিনের ছুটিতে সন্তুষ্ট নয়। এখানে লাগাতার দুই দিন ছুটি। মজা আর মজা, মজার ষোলকলা। হোলি হ্যায়......      

 

কী আছে এই বুড়ীর ঘর জ্বালানোর নেপথ্যে?

কে এই হোলি বা হোলিকা?

লোকসমাজ ভুলে গেছে সে ইতিহাস। প্রসাদ আর প্রমোদের মত্তায় এসব আর জানার দরকার  নেই তাদেরে। জানতে পারলে যে আকন্ঠ মদ্যপান করা যাবেনা। মোচ্ছবে মত্ত হতে বাধ সাধবে  তার  আক্রান্ত বিবেক। এই ভীমরতিই আজ মূলনিবাসীদের আত্তপরিচয় ও আত্তগৌরব ফিরে পাওয়ার পথে সবচেয়ে কঠিন অন্তরায়।     

শোনা কথায় বিশ্বাস করা মূলনিবাসীদের এক দুরারোগ্য ব্যাধি। এবিষয়ে তারা কাছাখোলাও বটে। ফলে গালগল্পের জাল বুনে এই কাছাখোলাদের সার্বিক বেড়ি পরাতে পেরেছে এদেশের পুরোহিততন্ত্র । নিপুন দক্ষতায় মূলনিবাসীদের উপর প্রতিটি আক্রমণকে তারা পরিবর্তিত করেছে ধর্মীয় আখ্যানে। এবং মূলনিবাসীদেরই কোন বড় উৎসবের দিনে তাদের বিজয়বার্তা কে প্রতিষ্ঠিত করে একদিকে ধ্বংস করে দিয়েছে লোকায়ত সংস্কৃতি অন্যদিকে হাইজ্যাক করে নিয়েছে প্রবাহমান পরম্পরা। বেদউপনিষদ,রামায়নমহাভারত বা পুরাণগুলি এই চুরি বিদ্যার সংকলিত গুপ্তধন। 

হোলিকা এই গুপ্তধনের অন্যতম কাহিনী যা পরবর্তী কালে মহাভারত ও পুরাণগুলিতে সংকলিত হয়েছে।

 

হোলি নারী হত্যা ও জিঘাংসার উৎসব ঃ

 ভারত রাষ্ট্র যে নারীদের প্রতি কতটা নিষ্ঠুর তা এই হোলি উৎসবের মধ্য দিয়েই প্রকাশ পায় লোক কাহিনী অনুসারে,হিরন্যকশ্যপ এক পরাক্রমী রাজা ছিলেন। ব্রাহ্মন্যবাদীরা তাদের পাপাচারের নীতি বেদবিধি,শৌচাচার বা পুরানের নীতিগুলিকে চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করলে রাজা হিরন্যকশ্যপ তা পরিত্যাগ করেন এবং পারম্পরিক প্রজ্ঞা পারমিতার নীতিকেই মানব কল্যাণের নীতি হিসেবে পালন করেন। তিনি ব্রাহ্মন্যবাদিদের বিরুদ্ধে নিজের মাতৃভূমি রক্ষা করার জন্য প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এতে বর্বর আর্যরা ভারতের অনেক রজ্য কব্জা করতে বিফল হয়। তারা ছলনা ও বহুরূপী নীতি গ্রহণ করে এবং রাজা হিরন্য কাশ্যপের পুত্র প্রহ্লাদকে কব্জা করে ফেলে। সুজোগ বুঝে ব্রাহ্মণ সেনাপতি নরসিংহের মূর্তির ছদ্মবেশ ধারণ করে রাজা হিরণ্য কশ্যপকে হত্যা করে। হিরণ্য কশ্যপের নাবালক পুত্র প্রহ্ললাদকে সিংহাসনে বসিয়ে বামুনেরা তাদের নীতি রুপায়নের ষড়যন্ত্র শুরু করে। তাদের ধারনা ছিল যে এই ব্যবস্থায় প্রজারা মনে করবে যে প্রহ্ললাদই শাসন করছে। ব্রাহ্মন্যবাদ কায়েম হলে প্রহল্লাদকেও হত্যা করা হবে।   

রাজা হিরন্যকের বোন ছিলেন হোলিকা। এই ষড়যন্ত্রের কথা তিনি জানাতে পেরে যান এবং প্রহল্লাদকে বাঁচানোর জন্য তাকে নিয়ে তিনি সুরক্ষিত স্থানে চলে যান। কিন্তু  আর্য দস্যুদের কুটিল নজর এড়িয়ে যেতে তিনি ব্যর্থ হন। দস্যুরা তাঁকে ঘিরে ফেলে। তাঁকে ধর্ষণ করে। তার রক্ত নিয়ে খেলতে থাকে এবং গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়।     

 

লোকায়ত সংস্কৃতির মধ্যে এই পুরাতনী বার্তা গভীর ভাবে প্রথিত হয়। জনগণ মহান রাজা হিরন্যক ও হোলিকার এই মৃত্যু দিনকে শোক দিবস হিসেবে পালন করার এক পরিক্রমা শুরু করে। তারা চিতা জ্বালিয়ে তার উপর গোলাপ জল ছিটিয়ে মূলনিবাসীদের প্রাচীন সভ্যতা ও ধম্ম রক্ষা করার জন্য রাজা ও হোলিকার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। এই শোকপালনরে অনুষ্ঠানের একটি পারম্পরিকতা তৈরি হলে বামুনেরা তাদের কাল্পনিক বিষ্ণুর নরসিংহ অবতারের কাহিনী তৈরি করে প্রাচীন ঐতিহাসিক তথ্য ধ্বংস করে দেয় এবং আমাদের মহান রাজাদের অসুরদৈত্যদানব,রাক্ষস সাজিয়ে খুনিধর্ষক ও বর্বরদের দেবতা ঈশ্বর বানিয়ে তোলে।

বসন্ত বা বাহা পরবের ঘাড়ে চাপানো হল হোলিঃ  

 

তুংদার "দা দা দাতালারে বাহু তিং" "আর টমাকের "হুগডা গুডাংএই যুগল বন্দীর তালে সকাল থেকেই জেগে উঠে আদিবসি পাড়াগুলি। গাও মাঝিগড়েতপারানিকনাইকেকুডাম নাইকে প্রকৃতর পরিবর্তনকে স্বাগত জানাতে জড়ো হন পবিত্র জাহের থানে। মঙ্গলাচারের সাথে সাথে মেয়েরা গাইতে থাকে ঃ

"কাড়া কাডায় জবে আকান গাং নাইরে,

গাং নাইরে হালে জোড়া সামুদ্রে"

এর পরেই চলে জল খেলা আর বসন্ত ঋতুকে আবাহনের সুরেলা সেরেং    

"বাহাবোঙ্গা মুলু এনা সারজোমদারে রে বাহাবোঙ্গা মুলু এনা"......

মাঝি জাহের এরাকে সন্তুষ্ট করেন নতুন পল্লব নতুন ফুল দিয়ে। তারপর সারাদিনরাত ধরে চলে  নাচ আর গান। পাগল করা তিরিওর পঞ্চম হিন্দোল। শাল মহুল পলাশের পরাগ মেখে মাতাল হয়ে ওঠে দুরন্ত ভ্রমর। মাঘের আগুন পোহান রাত শেষ হলে ডুংরিতে  ডুংরিতে, ডিহিতে ডিহিতে, কুলিতে কুলিতে সাড়া জাগে। প্রকৃতি সাজে নতুন ফুল ও পল্লবে। আর তার সাথে নিজেদের একাত্ততা অনুভব করার জন্য কৌম্যসমাজও এক মঙ্গলাচারে মেতে ওঠে। এই উৎসব বা পরবের নাম বাহাপরব।  ফুলের উৎসব। ফুল আসলে ঘুমন্ত বিবেকের প্রকাশ।  বিবর্তনের প্রতীক। সমন্বয় ও সমাবর্তনের প্রস্ফুটিত সুরবাহার।        

কোন কোন কৌমিক সমাজে এটিই আবার শারুল বা শারুল পরব। ফাল্গুন মাসের এই উৎসবকে কোথাও আবার ফাগুয়া নামেও অভিহিত করা হয়।    

 

চতুর পুরোহিতেরা জনপুঞ্জের এই পরবের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয় হোলি। পৌরাণিক কালের প্রতিটি হত্যা ও জিঘাংসাকে ঐশ্বরিক মহিমায় অলংকৃত করে ধ্বংস করে দেয় লোকসংস্কৃতির মূলাধার। প্রসাদ ও প্রমোদের মত্ততা এবং দীর্ঘ অভ্যাসের অবকাশে সেই আদি জিঘাংসাই এখন রং, পিচাকারী, গাঁজা, ভাঙ, চুল্লু ও বিলাতি ব্যসন ভূষণে একাকার হয়ে গেছে।

কে রাখে কার খবর! বরং খাও দাও ফুর্তি করো। চালিয়ে যাও হোলি হ্যায় ......           

 

No comments:

Post a Comment